Pigeons Observance

[কবুতর পালন] কবুতর পালনের প্রাথমিক ধারণা। The basic idea of ​​keeping pigeons

কবুতর পালন। kobutor palon

আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে kobutor.info তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে kobutor.info তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই kobutor.info এর সাথেই থাকুন ।

  • কবুতরের বাসস্থানঃ
ভালো নিষ্কাশন, পর্যাপ্ত আলো এবং বাতাস আছে এরূপ উঁচু এবং বালুময় মাটিতে কবুতরের ঘর করতে হবে, যা কবুতর পালনকারির আবাসস্থল থেকে ২০০-৩০০ ফুট দূরে এবং দক্ষিণমূখী হতে হবে। মাটি থেকে কবুতরের ঘরের উচ্চতা ২০-২৪ ফুট এবং কবুতরের খাচার উচ্চতা ৮-১০ফুট হতে হবে। খামারের জন্য ৩০-৪০ জোড়া কবুতর আদর্শ হবে। কবুতরের ঘরের আয়তন হবে ৯ ফুট ৮.৫ ফুট। ঘরে  খোপ গুলো ২-৩ তলা হতে হবে। এরূপ খোপের আয়তন প্রতিজোড়া ছোট বাচ্চা কবুতরের জন্য ৩০ সে. মি.x ৩০ সে.মি.x ২০ সে.মি. এবং বড় আকারের কবুতরের জন্য ৫০ সে. মি.x ৫৫ সে.মি. x৩০ সে.মি.। ঘর কম খরচে সহজে ভাবে তৈরী এবং স্থানান্তরযোগ্য যা কাঠ, টিন, বাঁশ, খড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরী করা যায়। কবুতরের ঘড়ের ভিতরে নরম, শুষ্ক খড়-কুটা রেখে দিলে তারা ঠোঁটে করে নিয়ে নিজেরাই বাসা তৈরী করে। কবুতর যে স্থানে ডিম দিবে তা তৈরীর জন্য ধানের খড়, শুকনো ঘাস, কচি ঘাসের ডগাজাতীয় দ্রব্যাদি উপযুক্ত । ঘড়ের ভিতর মাটির হারি বসিয়ে রাখলে কবুতর হাঁড়িতে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফুটায়।

  • খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ

৪-৫ দিন সময় লাগে কবুতরের বাচ্চার চোখ ফোটতে। তাই বাচ্চাগুলো দানাদার খাবার খেতে পারেনা। এসময় স্ত্রী এবং পুরুষ কবুতর তাদের পাকস্থলী থেকে ঘন ক্রীম বা ধুদের মত নিঃসরণ করে থাকে যাকে কবুতরের দুধ বলা হয়। এই দুধে আমিষ, চর্বি এবং খনিজ লবণ সমৃদ্ধ হয় যা এক সপ্তাহ পর্যন্ত কবুতরের বাচ্চা খেতে পারে । বাচ্চাগুলো যত দিন খাবার খেতে না পারে তত দিন পর্যন্ত স্ত্রী এবং পুরুষ কবুতর উভয়ে দানাদার খাদ্যের সাথে দুধ মিশিয়ে ঠোঁট দিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ায় থাকে।
কবুতরের জন্য যে খাদ্য তৈরি করা হবে তার মধ্যে শর্করা, আমিষ, খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, চর্বি এবং খনিজ লবণ সমপন্ন সুষম খাদ্য থাকা প্রয়োজন। ম্যাশ বা পাউডার খাদ্যের তুলনায় কবুতর দানাদার খাদ্য বেশি পছন্দ করে থাকে।
বাচ্চা কবুতর জন্য ২০-৩০ গ্রাম, মাঝারী কবুতরের জন্য ৩৫-৫০ গ্রাম এবং বড় কবুতর জন্য ৫০-৬০ গ্রাম খাবার দৈনিক দিতে হয়। দানাদার খাদ্যের মধ্যে গম, ধান, ভূট্টা, সরগম, ওট শতকরা ৬০ শতাংশ এবং লেগুমিনাস বা ডাল জাতীয় খাদ্যের মধ্যে সরিষা, খেসারী, মাটিকলাই ৩০-৩৫ শতাংশ সরবরাহ করতে হয়।
কবুতরের ভিটামিনের জন্য বাজারে প্রাপ্ত ভিটামিন ছাড়াও বিভিন্ন শাকসবজি, কচি ঘাস সরবরাহ করতে হবে ।
প্রতিদিন ২ বার খাবার সরবরাহ করা ভাল। মাঝে মাঝে পাথর, ইটের কণা (গ্রিট) এবং কাঁচা হলুদের টুকরা দেয়া উচিৎ হবে কারণ এই গ্রিট পাকস্থলীতে খাবার ভাঙতে সাহায্য করে এবং হলুদ পাকস্থলী পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত রাখতে পারে ।
কবুতরের ডিম পাড়ার সময় গ্রিট মিশ্রণ বা খনিজ মিশ্রণ, ডিম এবং ডিমের খোসা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ভাল হ্যাচাবিলিটির জন্য অতীব দরকারি । এই খনিজ মিশ্রণ বোন মিল (সিদ্ধ) ৫%, ঝিনুক ৪০%, লাইম স্টোন ৩৫%, গ্রাউন্ড লাইম স্টোন ৫%, লবণ ৪%, চারকোল ১০% এবং শিয়ান রেড ১% তৈরী করতে হয়  ।

  • পানি সরবরাহঃ

প্রতিদিন পানির পাত্র ভালভাবে পরিষ্কার করে ৩ বার পরিষ্কার পরিচছন্ন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। ১৪ দিন পর পর পটাশ মিশ্রিত পানি সরবরাহ করলে পাকস্থলী সুস্থ থাকবে এবং বিভিন্ন জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে।

  • রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাঃ

খামার হতে লাভবান হওয়ার এবং রোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য খামারের জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিতে হবে ।
১। কবুতর বাচ্চা দেওয়ার আগে খামারসহ ব্যবহার সকল যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে । প্রথমে পানি দিয়ে পানির সাথে কার্যকরী জীবানুনাশক (০.২-০.৫% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড বা আয়োডিন দ্রবণ) মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
২। সুস্থ্য সবল কবুতর সংগ্রহ করতে হবে। প্রয়োজনে বাহ্যিক পরজীবি নিধনের জন্য ০.৫% ম্যালাথিয়ন দ্রবণে কবুতরকে গোসল করিয়ে দিতে হবে । এক্ষেত্রে কবুতরের মুখ এই দ্রবণে ডুবানো যাবে না। নইজের হাত দিয়ে মাথায় লাগিয়ে দিতে হবে। অন্তঃপরজীবি থেকে বাঁচার জন্য কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করাতে হবে।
৩। কবুতরের খোপ, দানাদার খাদ্য ও খনিজ মিশ্রণ সরবরাহের পাত্র, পানির পাত্র ও গোসল করার পাত্র এবং কবুতর বসার স্ট্যান্ড নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। জীবাণুমুক্ত খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।
৪। খামারে মানুষের এবং বন্য পাখি ও ইঁদুর জাতীয় প্রাণী যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিবার খামারে প্রবেশ করার পূর্বে এবং খামার হতে বাহির হওয়ার সময় হাত ও পা অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৫। কোন কবুতর অসুস্থ হলে দ্রুত আলাদা করে ফেলতে হবে। অসুস্থ বা মৃত কবুতর এর রোগের কারণ জেনে অন্যান্য জীবিত কবুতরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

  • টিকা প্রদানঃ

খামারে রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কবুতরের প্রজননকালীন সময়ে প্যারেন্ট কবুতর গুলোকে রাণীক্ষেত রোগের মৃত টিকা প্রয়োগ করা উত্তম। টিকা প্রয়োগের কমপক্ষে ৩ সপ্তাহ পর বাচ্চা ফুটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করতে হবে। তবে বাচ্চা কবুতর উড়তে শেখার সাথে সাথেও টিকা প্রয়োগ করা যায়। জীবিত বা মৃত উভয় টিকাই প্রয়োগ করা যায়। জীবিত টিকা চোখে এবং মৃত টিকা চামড়ার নীচে বা মাংসপেশীতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম টিকা (জীবিত) প্রয়োগের কমপক্ষে ১৪ দিন পর দ্বিতীয় বা বুস্টার ডোজ দিতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button