Pigeons Observance

[কবুতর পালন] কবুতরের রোগ-ব্যাধি ও কবুতরের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ।


[কবুতর পালন] কবুতরের রোগ-ব্যাধি ও কবুতরের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ।


আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে kobutor.net তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে kobutor.net তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই kobutor.net এর সাথেই থাকুন ।

কবুতরের যেসব রোগ-ব্যাধি হতে পারে

  1. ডায়রিয়া
  2. বহিঃপরজীবী
  3. অন্তঃপরজীবী বা কৃমি
  4. ছত্রাক জনিত রোগ যেমন: Sour Crop – Candida, Thrush
  5. শ্বাসতন্ত্রের রোগ যেমন: মাইকোপ্লাজমোসিস, অর্নিথোসিস
  6. Adeno Virus Infection
  7. Circo Virus Infection
  8. পিজিয়ন ম্যালেরিয়া
  9. ক্যাঙ্কার বা ট্রাইকোমোনিয়াসি
  10. কক্সিডিওসিস
  11. কোলিব্যাসিলোসিস
  12. One-Eye Colds বা এক চোখে ঠান্ডা লাগা
  13. প্যারাটাইফয়েড বা সালমোনেলোসিস
  14. পিজিয়ন পক্স
  15. রাণিক্ষেত

কবুতরের চিকিৎসা সংক্রান্ত সাধারণ পরামর্শ

কবুতর পালকারিদের কঠিন সময় যায় কবুতর অসুস্থ হয় তখন৷ বাংলাদেশে কবুতরের চিকিৎসা বিষয়ে সঠিক পরামর্শ দেবার মত অনেক কম লোকই আছে ৷ তবে অসুখ হয়েছে এন্টিবায়োটিক খাওয়ান এমন মরামর্শ দেবার লোকের কমতি নেই ৷ মনে রাখবেন রোগ মারাত্বক হলে তবেই এন্টিবায়োটিক খাওয়াতে হয় এবং মধ্যম মাত্রার এন্টিবায়োটিক , রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে এন্টিবায়োটিক দেয়া যাবে না ৷

• রোগের প্রতিকার বা চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ উত্তম ৷ তাই কবুতরের রোগ প্রতিরোধের দিকে গুরুত্ব দিন ৷

• একই রোগে, একই ঔষুধ একইভাবে খাওয়ানোর পর একেকজনের অভিজ্ঞতা একেক রকম হতে পারে ৷ ধরুন, রক্ত আমাশয়ে ৫ দিনের চিকিৎসাতেই আমার কবুতর সুস্থ হতে পারে ৷ আর আপনারটা ১০ দিনের চিকিৎসাতেও পুরো সুস্থ নাও হতে পারে ৷ তাই চিকিৎসা ভুল হয়েছে এমন না ভেবে পরবর্তীতে কি করতে হবে, তা ভাল জানে এমন কারও কাছ থেকে জেনে নিতে হবে ৷

• খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা – ঔষুধ নির্বাচন করতে যে কারও ভুল হতে পারে ৷ কারও পরামর্শে কোন ঔষুধ প্রয়োগে কবুতর সুস্থ না হলে বা সম্যসার সমাধান না হলে, পরামর্শ দাতা জানেন না, এমনটা মনে করবেন না ৷ আবার সঠিক ঔষুধ সঠিকভাবে প্রয়োগের পরও কবুতর মারা যেতে পারে ৷ যদি এই কথা মেনে না নিতে না পারেন, তবে আর সামনে না যেয়ে এখানেই FULL STOP দিন ৷ এরপর আপনার যা ইচ্ছা করুন ৷

ইচ্ছে করে ভুল পরামর্শদাতা ব্যতিত, কবুতরের ক্ষতির জন্য পরামর্শ দাতা না, পরামর্শ গ্রহীতা দায়ী ৷ পরামর্শ গ্রহীতার দায়িত্ব, সঠিক পরামর্শ দিতে পারবে, এমন কারো কাছ থেকেই পরামর্শ নেয়া ৷

• কবুতর মারা গেলে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে শরীরের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষার জন্য এভিয়ান পশুচিকিত্সকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত ৷ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা (ময়না তদন্ত) করলে মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে এবং সঠিক ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে ৷ .

• কবুতরের চিকিৎসার জন্য কয়েকজনের কাছ থেকে পরামর্শ না নিয়ে ভালো জানে এমন একজনের পরামর্শ গ্রহণ করুন ৷
 • রোগের চিকিৎসা চলাকালীন কবুতরকে অবশ্যই বিশেষ যত্ন নিতে হবে ৷ আবহাওয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ শুধু ঔষুধ প্রয়োগই যথেষ্ট না ৷ গরমের সময় ঠান্ডা এবং শীতের সময় গরমের ব্যবস্থা করতে হবে ৷ কবুতর নিজে খেতে না পারলে চালের স্যালাইন দিতে হবে। অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে ৷

 • কবুতর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দুই/তিন ঘন্টা রোদে রাখুন ৷ গরমের সময় এমনভাবে রোদে রাখুন ৷ গরমের সময় এমনভাবে রোদে রাখতে হবে, যাতে একপাশে ছায়া থাকে ৷

 • ভুল ঔষুধ প্রয়োগ করলে বা ঔষুধ পরিবর্তন করতে হলে, নতুন ঔষুধ খাওয়ানোর ১/২ ঘন্টা আগে prevnone ১/২ ফোঁটা খাওয়াতে হবে ৷

• কোন ঔষধ বা ভিটামিন ৮ ঘণ্টার বেশি রাখা যাবে না।

. • ঔষুধ খাওয়ানোর পর যদি কবুতর বমি করে, তবে খাবার খাওয়ানোর আগে ঔষুধ খাওয়াবেন ৷ এবং দানাদার খাবারের পরিবর্তে তরল খাবার (চালের স্যালাইন, বার্লি অথবা আটা গুলিয়ে) খাওয়াবেন ৷

• ঔষুধ কখনই খোলা জায়গায় রাখবেন না ৷ বিশেষ করে গরমের সময় তো ভুলেও না ৷ স্টীলের আলমারী, ফাইল কেবিনেটেও না ৷ কাঠের বাক্স বা আলমারীতে ঔষুধ রাখবেন ৷ ঠান্ডা জায়গায় ঔষুধ ভাল থাকে ৷ ঔষুধের গায়েও লেখা থাকে ঠান্ডা এবং শুষ্ক স্থানে ঔষুধ সংরক্ষণ করুন ৷ সাধারণত ক্যাপ (সীল) খোলার পর কোন কোন ঔষুধ ৬০ দিন পর্যন্তও ভাল থাকে ৷ তবে ৩৫/৪০ দিনের মধ্যে ব্যবহার করা উত্তম ৷ কিন্তু সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে ১০/১৫ দিন পরেই ঔষুধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে ৷

• একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা ৷ হোমিও ঔষুধ সঠিক শক্তি এবং পরিমাণ ব্যবহার করলে কোন সম্যসা হবে না ৷ তবে বেশী শক্তির এবং পরিমাণে প্রয়োগ করলে সম্যসা হওয়া স্বাভাবিক ৷ .

• কখনই হোমিও এবং অ্যালোপাথি (মানুষের এবং ভেটেরিনারি) ঔষুধ একত্রে প্রয়োগ করবেন না ৷ .

• এন্টিবায়োটিক, হোমিও, হার্বাল, মানুষের ঔষুধ এক সাথে খাওয়াবেন না ৷ .

• অনেকে মনে করেন হারবাল ঔষুধ কবুতরকে দিতে হয় না ৷ অথচ আমরা জানি, অ্যালোপ্যাথি প্রয়োগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, কিন্তু হারবাল এবং হোমিওতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নাই ৷ তবে কেন কবুতরকে হারবাল দেয়া যাবে না? .

 • ঔষধের গায়ে লেখা নির্দেশনা মত ঔষধ ব্যবহার করতে যাবেন না। বাংলাদশে কবুতরের জন্য কোন ঔষুধ পাওয়া যায় না ৷ হাস মুরগির ঔষুধ কবুতরের জন্য প্রয়োগ করা হয় ৷ কিন্তু হাস মুরগি ও কবুতরের গঠন একই রকম না ৷ .

• দ্রুত রোগ সারানোর জন্য কখনই বেশি মাত্রায় ঔষুধ খাওয়ানো যাবে না ৷ বিশেষ করে এন্টিবায়োটিক ৷ একে তো কবুতর বেশি মাত্রার ঔষুধের ধকল সহ্য না করতে পেরে মারা যেতে ৷ দ্বিতীয় তো বেশি মাত্রায় ঔষুধ খাওয়ালে কবুতরের ইমিউনিটিতে এবং প্রজননে সম্যসা হতে পারে ৷ যদি কোন ঔষুধ খাওয়ানোর তিন দিনের মধ্যে কোন উন্নতি দেখা না যায়, সেক্ষেত্রে ঔষুধ পরিবর্তন করা যেতে পারে ৷ কিন্তু বেশি মাত্রায় দেয়াটা উচিত হবে না ৷ কিছু রোগে তিনদিন পরেও অবস্থার উন্নতি নাও হতে পারে ৷ কিছু পরিস্থিতিতে ঔষুধের মাত্রা বাড়ানো যায়, যা বুঝতে আপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ৷ .

• ভিটামিন বা কোন ঔষুধ দলা বেঁধে গেলে আর ব্যবহার করবেন না।

• ভিটামিন ব্যবহারের পর যদি হলুদ ধরনের পায়খানা করে, তাহলে ওই ভিটামিন আর ব্যবহার করবেন না।

• কবুতর বমি করলে ওমিডন বা এই ধরনের ঔষুধ বেশি ব্যবহার করবেন না। হিস্টাসিন , রেনামাইসিন ধরনের ঔষধ কখনও ব্যবহার করবেন না।

• অসুখের কথা জেনে ঔষুধ দিলাম ৷ সপ্তাহ পর জানা গেল কবুতর মারা গেলো ৷ ঔষুধ প্রয়োগের পরও কবুতর মারা গেলো ৷ তবে কি ভুল ঔষুধ দেয়া হয়েছে? গিয়ে দেখি কবুতরের খাবারের মধ্যে তেলাপোকা চলাফেরা করছে? কি মারাত্বক অবস্থা ৷ .

কবুতর অসুস্থ হলে শুধু ঔষুধ প্রয়োগই যথেষ্ঠ না ৷ কবুতরকে পরিষ্কার জায়গায় রাখতে হবে, নিজে খেতে না পারলে হাতে ধরে খাওয়াতে হবে, তেলাপোকা, ইদুরের উৎপাত থেকে দূরে রাখতে হবে ৷ অসুস্থ হলে ঔষুধের সাথে যে আরও যত্নআত্তি করতে হয়, এই সাধারণ ব্যাপারও যদি নিজের মাথায় না ধরে তবে তো সম্যস্যা ৷

• অসুস্থ কবুতরকে ধরতে হাতে গ্লাফস ও মুখোশ (মাস্ক) পরা উচিত ৷ এবং অসুস্থ কবুতরকে ধরার পর অবশ্যই জীবানুনাশক দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে ৷ কেননা কবুতরকে রোগের জীবানু মানুষেও সংক্রমিত হয় ৷ .

• চোখের রোগের জন্য চোখের ড্রপ ৫ দিনের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।

. কবুতরের বাসস্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে, সাল্মনেল্লা (salmonella), কৃমি ও কবুতরের শরীরের মাইট কে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান এবং ভালমানের খাবার দেন, তাহলে কবুতর পালন নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। মনে রাখবেন, যত কবুতর রোগে না মরে তার থেকে বেশি মরে উল্টাপাল্টা ঔষধ ও রোগ নির্ণয়ের অভাবে, অধিক পরিমানে ও মাত্রার এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ফলে, পরিচ্ছন্নতার অভাবে ৷ তাই এগুলোর ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে ।

• কবুতরের সঠিক চিকিৎসার জন্য সঠিক রোগ নির্ণয় জরুরি ৷ রোগ নির্ণয়ের জন্য কবুতরকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হয় ৷ রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কিভাবে কবুতরকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তা পরবর্তী পোষ্টে জানানো হবে ৷ .

• কবুতরের অসুখ হলে প্রথম কাজ হলো কবুতরকে আলাদা রাখা ৷ কেননা অসুস্থ কবুতর থেকে সুস্থ কবুতরের রোগ ছড়ায় ৷

• কিছু রোগ সাড়তে সময় লাগে ৷ তাই ধৈর্য ধরে চিকিৎসা চালাতে হবে ৷


বিঃদ্রঃ আজকে এই পর্যন্তই আমাদের ব্লকের সাথে থাকুন। আমাদের এই ওয়েবসাইটটিতে আমরা শুধু কবুতর নিয়েই আমাদের এই সাইট। কবুতর নিয়ে যা জানার, সব এখান থেকে জানতে পারবেন। ধন্যবাদ

আমাদের আরো কিছু পোস্টঃঃ






Related Articles

Leave a Reply

Back to top button