Pigeons History

কবুতর পাখি জগতের স্ত্রী ও পুরুষ ভেদের কারণ।

কবুতর পাখি জগতের স্ত্রী ও পুরুষ ভেদের কারণ
কবুতর 



এক খামাড়ী তার অধিকাংশ বাচ্চা জোড়ায় জোড়ায় নর হয় এবং এটা নিয়ে তিনি খুবই বিরক্ত ও চিন্তিত। এ রকম সমস্যার কম বেশী অনেক কেই সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু অনেকেই ভাবেন এটা inbreeding (নিকট আত্মীয়তাসূত্রে আবদ্ধ প্রাণীদের মধ্যে সন্তান উৎপাদন।) এর কারনে হয়। কিন্তু কথাটা আসলে ঠিক না। অনেক সময় inbreeding সাধারণত ঊষরতা(infertility) বা বন্ধ্যাত্বর জন্য দায়ী করা গেলও একই লিঙ্গের বাচ্চা উৎপাদনের জন্য কখনই দায়ী করা যায় না। আর প্রাণী জগতে মাদী উৎপাদন হওয়া মানে সুভাগ্যের নমুনা হিসাবে ধরা হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে সেটা যদি poultry এর ক্ষেত্রে হয়, তাহলে ত কোন কথাই নাই। যদিও অনেকে কবুতরের বেশি মাদী হাওয়ার ক্ষেত্রে বিরক্ত হন, কিন্তু মনে রাখবেন পাখি বা কবুতরের নর পাওয়া সহজ, কিন্তু মাদী পাওয়া খুবই কঠিন। 

প্রাণী জগতের মধ্যে পাখি বা কবুতরের যৌন সংকল্প বা প্রক্রিয়া বা পাখির যৌন উন্নয়ন পিছনে আণবিক নির্ধারণকারী একটি রহস্য থাকে যা হয়তো অন্য ভাবে বিচার বিবেচনা বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করা সম্ভব নয়। আর এটি হল ধর্মীয় ব্যাপার যেখানে অনুভূতি গুলো বেশী সক্রিয় থাকে। বৈজ্ঞানিক ভাবে বলা যায়, যে প্রক্রিয়ায় পাখি জন্ম হয় বা পাওয়া যায় তা থেকে স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে পুরুষ এর গড় জিন কোন একই ধরনের গঠন (homolog) থেকে আলাদা হয়। পাখি যেমন একটি জিন সনাক্ত করতে, সম্ভবত প্রাণিজগতের সর্বত্র প্রায় সর্বজনীন হচ্ছে দুই sexes সংঘটন সত্ত্বেও জড়িত জিন প্রাথমিক গঠনের মধ্যে কার্যত সম্পর্কহীন মনে হয়, আসলে এটি একটি প্রতিফলন মাত্র।আর এই পার্থক্য যৌন উন্নয়ন গবেষণায় তুলনামূলক প্রধান অন্তরায় হিসাবে ধরা হয়। পাখি বা কবুতর জগতে মেয়ে পাখি বা কবুতর তাদের বাচ্চার লিঙ্গ নির্ধারণে বিশেষ ভুমিকা রাখে বা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করে থাকে। মায়েরা তাদের ডিম বিভিন্ন ধরনের হরমোনে পরিবর্তন বা তৈরির মাধ্যমে তাদের বাচ্চাদের স্বভাব ,আকার,রং, ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এজন্য পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে মায়েরা তাদের ডিমে পর্যাপ্ত পরিমানে androgens(এক ধরনের হরমোন যা স্বভাব আকার,রং, ইত্যাদি তে সাহায্য করে থাকে।) মজুত রাখে। এক্সপার্ট দের মতে ও পরীক্ষামূলক প্রমাণের মাধ্যমে দেখা গেছে যে কবুতর মায়েরা তাদের বাচ্চাদের গোড়ার দিকে উন্নয়ন প্রভাবিত করে(যেমন দ্রুত বেড়ে উঠা ইত্যাদি)। মস্তিষ্ক এর ব্যবহারের উপর যৌন স্টেরয়েডের সুপরিচিত ও সংগঠিত ভূমিকা সত্ত্বেও মাতৃক ডিম হরমোন বাচ্চাদের উপর একচেটিয়া অধিপত্ত দেখা যায়। সাধারণত অধিক ডিম পাড়া ও কম পুষ্টির কারনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কবুতর মায়েদের জীবন বেশি দিন স্থায়ি হয় না। অনুরুপ ক্ষেত্রে বেশি সেক্স হরমোন হারানোর ফলে পুরুষ কবুতরের একই ধরনের ভাগ্য বরন করতে হয়। তাই ভাল বাচ্চা পেতে ও কবুতরের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবনের জন্য হিসেব করে ব্রিডিং করাতে হয়। তবে ডিম বড় বা ছোট হবার জন্য বড় ও সুস্থ বাচ্চা নির্ভর করে। আর এটি বাচ্চার বেচে থাকা নিশ্চিত করে থাকে। সাধারণত বাচ্চার লিঙ্গ নিধারনে যে সমস্থ প্রভাব কাজ করে তার নিয়ে সংক্ষেপে একটু আলোচনা করা হলঃ 

খাদ্যগত প্রভাবঃ 

অধিকাংশ প্রাণী যৌন অনুপাত 50:50 পাসে হবে এবং এর পরিবর্তন অত্যন্ত প্রতিরোধী। মানুষ সহ স্তন্যপায়ী শিশুর যৌন শুক্রাণু সেক্স ক্রোমোসোম পুরুষ বা মহিলা কিনা দ্বারা নির্ধারিত হয়। কিন্তু পাখি জগতে মেয়ে পাখি বা কবুতর ডিমের ভিতরের প্রোটিন লিঙ্গের নির্ধারণ করে। আর এই প্রোটিন নির্ভর করে পুষ্টির উপর, সাধারণত মেয়ে পাখি বা কবুতর কে যদি ভাল মানের বা সুষম খাদ্য ও খাদ্য সার(ভিটামিন ও মিনারেলস) দেওয়া হয় তাহলে ওভারি তে অধিক প্রোটিন উৎপাদিত হয় যা পরে ডিমের ভিতর সংরক্ষিত থাকে এর ফলে মেয়ে বাচ্চা হয়ে থাকে, আর অন্নদিকে কম পুষ্টি বা নিন্ম মানের খাবার বা ভিটামিন ও মিনারেলস ঘাটতি হলে ছেলে বাচ্চা বেশি উৎপাদিত হয়।আর লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে এটিই মুখ্য কারণ হিসাবে ধরা হয় বা মনে করেন বিশেষজ্ঞগন। 

জীনগত প্রভাবঃ 

আগেই ঊল্লেখ করা হয়েছে যে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে লিঙ্গ নির্ধারণে পুরুষদের ভূমিকা বেশী, আর পাখি বা কবুতরদের ক্ষেত্রে মাদী , মেয়ে পাখী বা কবুতর সাধারণত এক কপি Z এবং W যৌন ক্রোমোজোমের হয়। আর পুরুষরাই ২ কপি (ZZ) হয়। যাইহোক, এটা মহিলা বা পুরুষ উন্নয়ণে ভূমিকা রাখে। W ক্রোমোসোম থলি এবং scrotum মধ্যে পছন্দ নির্ধারণ করার সময় , যেমন, Z ক্রোমোসোম নির্ণয় একটি প্রভাবশালী testis হিসাবে কাজ করে। আর হয়তো এটি দুই যৌন ক্রোমোজোমের বিভেদ এর ফলে হয়। 

তাপমাত্রা গত প্রভাবঃ 

কবুতরের বাচ্চা সাধারণত ১৭ থেকে ১৯ দিনের মধ্যে ফূটে। আর এই সময় তাপমাত্রাঃ ৩০-৪০ সেলসিয়াস ও আর্দ্রতা ৮০-৯০%। ১৫ দিনের পর ডিম সরানো উচিত না। আর এই সময় আর্দ্রতা অবশ্যয় ৯০% থাকতে হয়। সাধারণত তাপমাত্রা খুব একটা প্রভাব থাকে না, তবে একবারে ঊড়ীয়ে দেওয়াও যায় না। বলা হয় ৩১ বা বেশী সেলসিয়াস তাপমাত্রাই বেশীর ভাগ ছেলে বাচ্চা ও ৩৬ বা বেশী সেলসিয়াস তাপমাত্রাই বেশীর ভাগ মেয়ে বাচ্চা হয়। তবে সরীসৃপ প্রাণীর ক্ষেত্রে এর উল্টো তা হয়ে থাকে আর মুলত তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে আর অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হয়। আর এই কারনে দেখা গেছে স্তন্যপায়ী প্রানির ক্ষেত্রে গরমের দিনে ক্রস করা বেশি বাচ্চা, ছেলে হয় আর শীতের সময় মেয়ে। কিন্তু পাখির বা কবুতরের ক্ষেত্রে তার উলটাটা হয়। 

একটি সুস্থ মাদী ভাল বাচ্চা উৎপাদন করে থাকে, তুলনা মূলক পুরুষ পাখীর থেকেও। 
(কেও আবার ভ্রু কুচকে ভাববেন না যে, পুরুষ পাখী কীভাবে বাচ্চা উৎপাদন করবে? কারন আমি জীন গত কারণের ব্যাপারে বলছি।) তবে অনেক হয়তো এই ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করতে পারেন, বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, কিন্তু এগুলো পরীক্ষিত সত্য। আর এজন্য এ সম্পর্কে বিস্তারিত আপানাদের কে অবহিত করতে ডিম ও এর গঠন প্রণালী নিয়ে ভবিষ্যতে লিখার আশা রাখী।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button